Eye Tech 24
https://www.eyetech24.com/2021/11/blog-post_29.html
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট
১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর মাসে পাকিস্তান হানাদার বাহিনী বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ বাহিনীর কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ করে। বিশ্বের মানচিত্রে বাংলাদেশ, নামে নতুন একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের জন্ম হয়। বহুমানুষের জীবন ও রক্তের বিনিময়ে বীর বাঙালি ছিনিয়ে আনে লাল -সবুজের বিজয়ের পতাকা।
পোষ্টের সূচিপত্র
স্বাধীনতার ঘোষণা
পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে সর্বাত্মক সংগ্রামের জন্য বাংলার জনগণকে পশ্চিম পাকিস্তানের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানান। ২৬শে মার্চ চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্র থেকে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে মেজর জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেন। বাংলাদেশ শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র গঠন হয়েছে। আরো উল্লেখ করেন যে নব গঠিত সরকার গঠন হয়ে বিশ্বের অপর রাষ্ট্রগুলোর সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক সৃষ্টিতে আগ্রহী। বাংলাদেশে সংঘটিত গণহত্যার বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয়।
১৯৭১ অসহযোগ আন্দোলন
নির্বাচনের জয়লাভের পর পাকিস্তানে সামরিক শাসক জেনারেল ইয়াহিয়া খান। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সরকার গঠনে মত দিতে অস্বীকার করেন, জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়েছে যারা, তারা সরকার গঠন করবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু পশ্চিম পাকিস্তানী সামরিক সরকার কিছুতেই পূর্ব পাকিস্তানের হাতে ক্ষমতা দেয় না। বিভিন্ন রকমের আলোচনা শুরু করে এবং কালক্ষেপণ করতে থাকে, বাঙালি বুঝতে পারে কিছুতে আমাদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করবে না। জাতীয় সংসদের নির্ধারিত অধিবেশন স্থগিত' এর প্রতিবাদে বঙ্গবন্ধু ১ লা মার্চ ১৯৭১ সালে দেশব্যাপী অসহযোগ আন্দোলনের আহ্বান জানান। পূর্ব পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর না করায় ,৭ই মার্চ ১৯৭১সালে বঙ্গবন্ধু রেসকোর্স ময়দানের (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) জাতিকে এক দিক নির্দেশনী ভাষণে সর্বপ্রকার পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য প্রস্তুত হতে আহ্বান জানান। তোমাদের কাছে আমার অনুরোধ রইলো ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোল, এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম ,এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম,২৫ শে মার্চ ১৯৭১ রাত ১২:৩০ মিনিটে সেনাবাহিনী হাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ধানমন্ডির বাসভবন থেকে বন্দী হবার পূর্বে তিনি দলীয় নেতৃবৃন্দকে করণীয় বিষয়ে যথাযথ নির্দেশ দিয়ে, অবস্থান পরিবর্তনের কথা বলেন, একই সাথে তিনি বাংলাদেশকে একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করেন।
অপারেশন সার্চলাইট
অপারেশন সার্চলাইট২৫ শে মার্চ পাকিস্তান সেনাবাহিনী পূর্ব-পাকিস্তানের বড় শহর গুলোতে গণহত্যা শুরু করে, পূর্ব পরিকল্পিত এই গণহত্যা অপারেশন সার্চলাইট নামে পরিচিত চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন জায়গায় গণহত্যা শুরু করে, বিদেশী সাংবাদিকদের নিজ নিজ দেশে যেতে বাধ্য করে, তার কারণ এই গণহত্যা বহিঃবিশ্ব যেন জানতে না পারে, তবে ওয়াশিংটন পোস্ট এর বিখ্যাত সাংবাদিক সায়মন ড্রিং জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাংলাদেশের হত্যার খবর প্রকাশ করেন। আর এই সাংবাদিকের মাধ্যমে সারাবিশ্ব জানতে পারেন নির্মম গণহত্যার খবর।২৫ শে মার্চ রাত সাড়ে ১১ টার দিকে পাকিস্তানী বাহিনী তাদের গণহত্যা শুরু করে, রাতের আঁধারে ঘুমন্ত মানুষের উপরে গণহত্যা শুরু করে, রাজারবাগ পুলিশ লাইন আক্রমণ করে হত্যা করা হয় পুলিশ সদস্যদের, সেই রাত্রিতে একমাত্র ঢাকা ও তার আশপাশ এলাকায় এক লক্ষ নিরীহ নারীর জীবনবাসন ঘটে।
শরণার্থী
শরণার্থী পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নির্যাতনের শিকার হয়ে বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশের মানুষ ভারতে আগমন করেন ভারতে ১৪১ টি শরণার্থী শিবির স্থাপিত হয়
বিজয়
১৯৭১ অক্টোবর মাসে পাকিস্তান সেনাবাহিনীরা, মুক্তি বাহিনীর আক্রমণে চারদিক থেকে সমস্ত সীমান্ত এলাকা ছেড়ে দিয়ে সেনানিবাসে যেতে বাধ্য হয়। তখন মুক্তিবাহিনী বাংলাদেশে প্রায় ৯০ ভাগ এলাকা মুক্ত করেছিল । ১৯৭১ নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় বাহিনী চারদিক থেকে আক্রমণ করার ফলে, যুদ্ধের মোড় পরিবর্তিত হয়, ৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ ভারত বাংলাদেশকে স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিলে, মুক্তি বাহিনীর মনোবল বহুলাংশে বৃদ্ধি পায়। সম্মিলিত বাহিনীর আক্রমণে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পরাজয় হয়।
0 Comments
দয়া করে নীতিমালা মেনে মন্তব্য করুন